মার্কিন কংগ্রেসে সৌদি-আমিরাতের শাস্তি দাবি

জ্বালানি তেলের উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্তে মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের দুই দেশ সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি উঠেছে মার্কিন আইনসভা কংগ্রেসে। খবর আল জাজিরা, আরটি।

সোমবার আরটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক পার্টির আইনপ্রণেতা সিন ক্যাস্টেন, টম ম্যালিনস্কি ও সুসান ওয়াইল্ড কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে একটি বিল উপস্থাপন করেন। সেই বিলে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের মার্কিন সেনাঘাঁটি থেকে সেনা সদস্যদের প্রত্যাহার ও এই দুটি দেশের কাছে যেসব অত্যাধুনিক অস্ত্র বিক্রির চু্ক্তি হয়েছিল- সেগুলো বাতিলের আহ্বান জানানো হয়।

প্রস্তাবিত বিলে বলা হয়, ‘সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিরক্ষা সহায়তা দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু তারা এখন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে, যার কারণ আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না। যদি সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত পুতিনকে সহযোগিতা করতে চায়, তাহলে তাঁর কাছ থেকেই প্রতিরক্ষা সুবিধা নেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।’

ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সামরিক অভিযানের জেরে রাশিয়াকে শাস্তি দিতে দেশটির জ্বালানি তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র পশ্চিমা বিভিন্ন দেশ। এ কারণে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে স্বাভাবিকভাবেই মধ্যপ্রাচ্যের তেলের ওপর নির্ভর করতে চাইছে পশ্চিমা বিশ্ব।

গত জুলাই মাসে সৌদি সফরে গিয়েছিলেন বাইডেন, সেই সফরে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানকে তেলের উত্তোলন আরও বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। যুবরাজও তখন আপত্তি করেননি।

এদিকে রুশ তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞার থাকায় প্রথমদিকে ব্যাপক লাভের মুখ দেখলেও যুদ্ধের জেরে গত তিন মাস ধরে ডলারের মান লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি ও তার ফলে বিভিন্ন দেশ তেল কেনা কমিয়ে দেওয়ায় লোকসানের মুখে পড়ে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার।

সৌদি ও আরব আমিরাত উভয়ই যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের এশীয় মিত্র হিসেবে পরিচিত। দুটি রাষ্ট্রেই যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি আছে। সম্প্রতি সৌদির কাছে এমআইএম-১০৪ প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স মিসাইল সিস্টেম এবং আমিরাতের কাছে টার্মিনাল হাই অলটিচিউড এরিয়া ডিফেন্স ব্যালেস্টিক মিসাইল ইন্টারসেপ্টর বিক্রির চুক্তি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই অত্যাধুনিক দুই সমরাস্ত্র বিক্রির অনুমোদনও দিয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেসে যে বিল তোলা হয়েছে, সেটি পাস হলে এসব অস্ত্র আর পাবে না মধ্যপ্রাচ্যের দুই উপসাগরীয় দেশ।